1. fancy615439@gmail.com : Jannatul Ferdous Abodhi : Jannatul Ferdous Abodhi
  2. ahmedsuman307@gmail.com : Ahmed Suman : Ahmed Suman
  3. rakibowasim@gmail.com : Rakib-Ul Islam : Rakib-Ul Islam
কান উসৎবে মঞ্চ কাঁপালেন অভিনেত্রী বাঁধন - দৈনিক সপ্তস্বরা
শনিবার, ০১ এপ্রিল ২০২৩, ১০:২১ পূর্বাহ্ন

কান উসৎবে মঞ্চ কাঁপালেন অভিনেত্রী বাঁধন

Jannatul Abodhi
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ৯ জুলাই, ২০২১

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে প্রথম নায়িকা হিসেবে ফ্রান্সের কান চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নিয়ে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ চলচ্চিত্রের অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন সকলের নজর কাড়লেন।

তিনি বলছেন, ছবিটির অংশ হতে পেরে তিনি গর্ববোধ করছেন।

বিশ্ব চলচ্চিত্রের মর্যাদাপূর্ণ এ উৎসবের ৭৪তম আসরের ‘আঁ সেত্রাঁ রিগা’ বিভাগে বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মতো অফিসিয়াল সিলেকশনে জায়গা পেয়েছে নির্মাতা আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের এ ছবি।
বুধবার ছবির প্রদর্শনীর আগে দক্ষিণ ফ্রান্সের ভূমধ্যসাগরের তীরঘেঁষে পালে দে ফেস্টিভাল ভবনের দুবুসি থিয়েটারের সামনে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ ছবির প্রিমিয়ারের লাল গালিচায় হেঁটেছেন বাঁধন।
বাঁধন আরো বলেছেন,“কানে অংশ নেওয়া আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি। এমন সুযোগ পাওয়া খুব কঠিন। আমি ছবিটির অংশ হতে পেরেছি বলে গর্বিত।”

এর আগে মঙ্গলবার উদ্বোধনী আয়োজনের মূল লাল গালিচায় হাঁটার সুযোগ থাকলেও সঙ্গত কারণে অংশ নেননি তারা।
পরদিন পালে দে ফেস্টিভালের পাশে উত্তাল সমুদ্রের নীল জলরাশিকে পেছনে ফেলে ঢাকাই জামদানি জড়িয়ে ক্যামেরার সামনে দেখা গেছে বাঁধনকে; কখনও হাই হিলের সঙ্গে মখমলি জাম্পস্যুটে মোহনীয়তা ছড়িয়েছেন এ নায়িকা। তাবৎ বিশ্বের প্রভাবশালী সব গণমাধ্যমের ক্যামেরার লেন্স খুঁজে নিয়েছে তাকে।
হলিউডের নন্দিত নায়িকাদের হরহামেশাই এমন দৃশ্যে দেখা মিললেও বাংলাদেশের কোনো নায়িকা এতদিন ছিল শুধুই কল্পনায়; পঞ্চাশ বছরের কল্পনাকে বাস্তবে পরিণত করলেন বাঁধন।

জীবনের স্মরণীয় মুহূর্তের অংশ হতে পেরে নির্মাতা আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বাঁধন। নারীকেন্দ্রিক গল্পের এ চলচ্চিত্রে মধ্যবয়সী এক সহকারী অধ্যাপক রেহানা মরিয়ম নূরের চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।
বাঁধন বলেন, “পুরো কৃতিত্ব পরিচালক সাদের। আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় নারীপ্রধান গল্পের সিনেমা করা কঠিন। নারীর দৃষ্টিতে সমাজকে কেউ দেখতে চায় না, আবার দেখাতেও চায় না।
“পারিপার্শ্বিক কারণে নারীরা তা পারে না; আর ছেলেদের পক্ষে বিষয়টি বুঝতে পারা কঠিন। কেউ কেউ বুঝলেও সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির কারণে ঝুঁকি নিতে চান না। এ ছবিতে নারীকে যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে তা বোঝার ক্ষমতা খুব কম পুরুষেরই রয়েছে। সাদ আলাদাভাবে চিন্তা করতে পেরেছে। আমাকে ইতিহাসের অংশ করার জন্য সাদের প্রতি সারাজীবনের জন্য কৃতজ্ঞ থাকব।”
প্রায় দেড় বছর ধরে ছবির কাজ শেষ করার পর পুরো ছবিটি দেখার সুযোগ হয়নি বাঁধনের। পরিচালক সাদ তাকে জানিয়েছিলেন, কানে গিয়ে পর্দার রেহানার সঙ্গে দেখা হবে বাঁধনের।
বুধবার দর্শকদের সঙ্গে কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রথমবার ছবিটি দেখেছেন বাঁধন। প্রদর্শনের পর হলভর্তি দর্শকের করতালিতে অভিভূত হয়ে আনন্দঅশ্রুতে ভেসেছেন বাঁধন। ভাষাগত দূরত্ব ছাপিয়ে দর্শকদের মাঝে কেউ কেউ পর্দার রেহানার মাঝে নিজেকে আবিষ্কার করেছেন।
এক ফরাসি নারী দর্শক হলের ভেতরে বাঁধনকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন; রেহানার যন্ত্রণা, জেদ ও দৃঢ় মনোবল তার হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন। সেই দর্শকের সঙ্গে বাঁধনের আলিঙ্গনের মুহূর্ত হলজুড়ে মুহুর্মুহু করতালিতে মুখর হয়ে উঠে; সেই মুহূর্তে জোর চেষ্টায়ও নিজের কান্না লুকাতে পারেননি বাঁধন।

দর্শকদের প্রতিক্রিয়ায় বাঁধন অনুভব করেছেন, রেহানা শুধুই বাংলাদেশের নারীদের নয়; বিশ্বের নানা প্রান্তে হাজারও নারীর কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছে। রেহানার মুখের ভাষা না বুঝলেও মনের ভাষা, অভিব্যক্তির মাঝে নিজেদের খুঁজে নিয়েছেন দর্শকরা।
হল থেকে বেরিয়েও কেউ কেউ চরিত্র হিসেবে রেহানার প্রতি ও বাঁধনের অভিনয়ের প্রতি মুগ্ধতার কথা জানিয়েছেন। প্রদর্শনী শেষে বুধবার লাঞ্চের ফাঁকে এক বিদেশি পরিচালক বাঁধনের অভিনয়ের প্রশংসা করে বলেছেন, ‘ইউ আর অ্যামাজিং’। ডিনার থেকে ফেরার পথে এক ফরাসি নারী বাঁধনকে পেয়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে বলেছেন, “তুমি তো রেহানা, তোমার ছবিটি দেখেছি। দুর্দান্ত। আমি কি তোমায় একটু ছুঁয়ে দেখতে পারি?’
বাঁধন বলছেন, এমন ঘটনার মুখোমুখি হয়ে তিনি বোকা বনে গেয়েছিলেন। তাকে এভাবে কেউ চিনবে সেটা জীবনে কল্পনা করার সাহসই পাননি।
‘রেহানা মরিয়ম নূর’ চলচ্চিত্রের সঙ্গে বাঁধনের সফর শুরু হয়েছিল দেড় বছর আগে। ব্যক্তিগত জীবনের বিষণ্ণতার সঙ্গে লড়াইয়ে পেরে না উঠার শঙ্কায় ছবিটি ছেড়েই দিতে চেয়েছিলেন বাঁধন!
বাঁধন জানালেন, দেড় বছর আগে স্ক্রিপ্টটা হাতে পাওয়ার সময় থেকেই ছবির প্রযোজক, নির্মাতাসহ সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল তার। ব্যক্তিগত জীবনের বিষণ্ণতার জন্য চরিত্রে পুরোপুরি মনোনিবেশ করতে পারবেন কি না-তার শঙ্কায় ছবিটি ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন তিনি।
“সেই সময়ে সাদ আমাকে শক্তি দিয়েছিল। ও বলেছিল, তুমি ‘রেহানা’ না করতে পারলে কেউ পারবে না। তার দৃঢ়তা আমাকে শক্তি দিয়েছে। আমি প্রশিক্ষিত অভিনেত্রী না, টেকনিক জানি না। আমি ক্যামেরার সামনে রিঅ্যাক্ট করেছি, অ্যাক্ট করিনি।”

“শুটিংয়ের সাদের সঙ্গে নানা বিষয়ে দ্বিমত হয়েছে; তবে ও বরাবরই আমার উপর ভরসা রেখেছে। আমি ওকে ও ছবির টিমকে বিশ্বাস করেছি; সেই সঙ্গে পরিশ্রম করেছি। নিজের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে কাজটা করার চেষ্টা করেছি।”
ছবিটি করতে গিয়ে দেড় বছরের মতো সময় অন্য কোনো কাজ করেননি বাঁধন; বিষয়টি নিয়ে সহকর্মীদের মধ্যে কারও কারও দুয়ো শুনতে হয়েছে তাকে। কেউ কেউ ভ্রু কুঁচকে বলেছেন, ‘কী এমন কাজ যেটা দেড় বছর ধরে করতে হয়’ অনেকে আবারও ‘পাগলের প্রলাপ’ বলেও বাঁধনকে খারিজ করে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
বাঁধন জানালেন, সেই সব দুয়ো হজম করেই এতদূর এসেছেন তিনি। তারাই এখন তাকে শুভকামনা জানাচ্ছেন; বলছেন, তোমার সেই সিদ্ধান্তটা খুব ভালো ছিল।
ছবিটি কানে ছবির প্রদর্শনীর পর ‘স্ট্যান্ডিং ওভেশন’ পেয়েছে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’। ছবিটিকে ঘিরে বাংলাদেশের দর্শকদের প্রত্যাশার পারদ এখন চূড়ায়।
এই প্রত্যাশায় বাড়তি চাপ অনুভব করছেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে বাঁধন বলেন, “প্রত্যাশার চাপ আগে থেকেই ছিল। আমি বিশ্বাস করি, সাদ একদিন অস্কারও পাবে। সাদ অসম্ভব সৎ ও মেধাবী একজন নির্মাতা। নির্মাতা হিসেবে ওর নিজের মেধাটা কাজে লাগাতে পারবে।

কানে হলভর্তি দর্শকের অভিবাদনে আপ্লুত বাঁধন
“আমি অ্যাক্টর, আমাকে কাজে লাগাতে হবে। আমার জন্য সুযোগ কম। জীবনের অর্ধেক প্রায় শেষ।

 

তথ্যসূত্রঃসংগৃহীত

 

ফেইসবুক আইডি থেকে মন্তব্য করুন :

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সমজাতীয়
© All rights reserved © 2022 swaptasora
কারিগরি সহযোগিতায় : মোস্তাকিম জনি