ড্রোন এখন যুদ্ধের ময়দান থেকে শুরু করে নানান অনুসন্ধানে পৌঁছে গেছে। প্রযুক্তিবিদরা এখন মনুষ্যচালিত যান থেকেও দূর থেকে নিয়ন্ত্রণযোগ্য ড্রোন ব্যবহারের দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে। আজকাল যুদ্ধেও সর্বাধিক ব্যবহৃত প্রযুক্তির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ড্রোন।
আর্মেনিয়া-আজারবাইজান যুদ্ধ এবং চলমান ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধেও ড্রোনের নানান সফলতার কথা উঠে এসেছে সংবাদ মাধ্যমে। তবে গবেষকরা এখন আরও অনেক কাজে ড্রোন ব্যবহারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রযুক্তিবিদদের মতে দুঃসময়ের বন্ধু হিসেবেও কাজ করতে পারে ড্রোন। দুর্যোগকালে খাবার ও পানি সরবরাহে কিংবা দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে উদ্ধারকাজে মানুষের পরিবর্তে ড্রোনের ব্যবহার আরও নিরাপদ।
সম্প্রতি একদল সুইস বিজ্ঞানী তৈরি করলেন খাবারের তৈরি ড্রোন যা খাওয়ার যোগ্য। গত ২ নভেম্বর গাগ্যাজেট ডট কম-এর প্রতিবেদনে এটি তথ্য উঠে এসেছে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক সুইস ফেডেরাল ইন্সটিটিউট অভ টেকনোলজি লোজান (ইপিএফএল)-এর একদল গবেষক ইন্টেলিজেন্ট রোবটস অ্যান্ড সিস্টেমস শীর্ষক আইইই এবং আরএসজে আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে ড্রোনটির প্রোটোটাইপের উত্থাপন করেন।
সুইস ফেডারেল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির বিজ্ঞানীরা আংশিক ভোজ্য এই ড্রোন তৈরি করেছেন। রোবোফুড ইউরোপীয় প্রকল্পের অংশ হিসেবে ড্রোনটি তৈরি করা হয়েছে বলেও সম্মেলনে জানান তারা। এই ধরনের ড্রোন তৈরির প্রধান উদ্দেশ্য হলো দুর্যোগে থাকা মানুষদের খাবার পৌঁছে দেয়া। ওই ড্রোনের ডিজাইনের কিছু অংশ খাবার দিয়ে তৈরি, যা উদ্ধারকারীদের আগমনের অপেক্ষায় থাকা মানুষের জীবন বাঁচাতে পারে। সুইস বিজ্ঞানীরা তাদের ড্রোনটি এখনও উন্নত করে চলেছেন। ড্রোনের বর্তমান সংস্করণের নিজস্ব ভরের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত খাদ্যের পেলোড রয়েছে এতে। ভবিষ্যতে এই সংখ্যা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ড্রোনটিতে রয়েছে ভাতের ওয়েফার দিয়ে তৈরি ভোজ্য পাখা যা একজন মানুষের সকালের নাস্তার চাহিদা মেটাতে পারবে। এ পাখাগুলো মৌচাক আকৃতি অনুযায়ী কেটে জোড়া লাগানো হয় জেলাটিন নামক পদার্থ দিয়ে। এছাড়াও এটি যাতে পানির সংস্পর্শে এসে যেন নষ্ট না হয় সেজন্য মোড়ানো হয়েছে ফয়েল পেপারে। এই প্রোটোটাইপটি ঘণ্টায় ৩৬ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারে। এটিকে আরও কার্যকর করতে ভবিষ্যতে বিজ্ঞানীরা এতে একটি কন্টেইনার যুক্ত করতে চান যাতে পানি সরবরাহ করা যায়।
তথ্যসূত্র: স্পেকট্রাম/ গাগ্যাজেট ডট কম