কাব্যঃ-১
শিরোনামঃ-‘আত্মকথা’
কলমেঃ সরদার রাকিবুল ইসলাম বনসাই
আত্মারা কথা বলে আপনের অজানাতে,
রঙিন শব্দে করে দিবা রাঙায়ন।
অতিশয় বেদনা রূখে যায় আলাপনে,
সেই আশাতেই মেলি রোজ বাতায়ন।
সুখ পল্লীর গৃহে আমি দুয়ার ঠুকাই,
হিংসায় জ্বলে মরে কষ্টের দল।
আদরের সুরগুলো ভায়োলিন বটে,
নিমিষেই কালোদাগ ভাঙলো দেয়াল।
মৌনতা ছুটে যায় দূরত্ব ভেঙেচুরে,
খুঁজে নেয় প্রমোদের ঠিকানা।
আত্মার ভাবনারা দৃঢ়তার শপথে,
অশ্রুরা বেলা শেষে ঝরতে মানা।
কি মায়ার বিচ্ছুরণ মোর অবধির পানে??
না জানুক বিশ্ব, তবে বনসাই জানে।
কাব্যঃ-২
শিরোনাম:- মোম পুকুর
কলমেঃ সরদার রাকিবুল ইসলাম বনসাই
ফেরারি ভবঘুরে হয়ে,
ছুটেছি দিগন্ত পানে।
খুঁজেছি রূদ্ধশ্বাসে,
কি আমার জীবনের মানে?
লোকে দেখিয়েছে মোম পুকুরের ভয়!
সবই নিঃশ্বাসে হারায়!
যাস না সেদিক অমুক-তমুক!
তার থেকে ভালো ঘরে ফিরে আয়।
এভাবেই ছোয়া হয়নি হাজারো মাইলফলক।
যতবার ছুটেছি সম্মুখ পানে,
ওরা দেখিয়েছে মোম পুকুরের ঝলক।
জীবিত লাশ হয়ে বেঁচে আছে
উদ্যোমী ছুটে চলা সেই আমিত্ব।
যারা উঠেছিল স্বপ্ন খেয়ায়,
জুজুর ভয়ে তারাও ঘুমায় ঘরের কোনায়।
ওরা স্বপ্ন খুনী।
মোম পুকুরের মিথ্যে আভাসে ওরা গিলে খেয়েছে,
সহস্র-অজস্র তারুণ্যের হৃৎপিণ্ড।
আর কতকাল?
আর কতকাল রূখে যাবে মোদের স্বপ্নের পথচলা?
আর কতকাল চলবে এদের তান্ডবলীলা?
এসেছে সময়।
ওই মোম পুকুর, ওই জুজুর ভয়।
সব মিশিয়ে দে ধুলায়।
সমালোচনার মুখ থুবড়ে দিয়ে চল,
ছিনিয়ে আনবি বিজয়।
কাব্যঃ-৩
শিরোনাম:- ‘বাসন্তীকে হিন্দোলা’
কলমে:- সরদার রাকিবুল ইসলাম বনসাই
লাল রঙে ভরে গেছে পলাশের গাছ,
সৌরভ বিলিয়ে তার উচ্ছ্বাস।
ফুলেদের মেলা বসে শিমুলতলী,
পাখিদের নীড়ে চলে উল্লাস।
অটবির কাননে চিকচিক কিশলয়ে,
ফিরেছে নতুন প্রান।
ফাগুনের আগুনে রঞ্জিত অন্তরা,
ছুটছে কুসুমিত ঘ্রান।
এসেছে জাগরণ প্রকৃতির পথে,
স্বতেজ চিত্তে অবিরাম।
নবদিগন্তে চলে ওয়াটারফউল
দৃষ্টিকে করে মনোরম।
স্নিগ্ধ বাতাস করে পুলকিত মন,
দিয়ে যায় সুদিনের আহ্বান।
কোকিলের সুরে সুরে মুখরিত দেশ,
চারিদিকে বাসন্তী জয়গান।
রঙিন শব্দগুলো খুঁজে নেই কলি,
থেমে যাওয়া আজ বুঝি বন্ধ।
ফুল-পল্লবে করে সুভাষিত পথ,
ঝরা পাতাগুলো তোলে ছন্দ।
এইতো বসন্ত হৃদয়ের দোলা,
কবি মনে জাগায় পুথি।
দৃষ্টির কোণ জুড়ে করে সে খেলা,
কাব্যের হীয়াতে জড়ায়ে প্রীতি।
কাব্যঃ-৪
শিরোনাম:- ‘একুশের মননে’
কলমে:- সরদার রাকিবুল ইসলাম বনসাই
একুশের রক্তিম দহনে রঞ্জিত রাজপথ।
কৃষ্ণচূড়ার মতো রঙ মেখে নিয়েছে ধূসর প্রান্তর।
পলাশের রঙ লাল,
শিমুলের রঙ লাল,
লালকে রাঙিয়ে একুশের যেন,
বোবাকান্নার উত্তাল।
ওই রাঙা খুনে রঙিন পথে,
রাঙাতে পারিনি মন।
কাদা হওয়া এই লাল মাটিগুলো,
কাঁদায় প্রতিটি ক্ষন।
আমি রক্তের গান গায়।
ফেব্রুয়ারীর প্রভাত ফেরী অশ্রুতে কথা কয়।
আমি বাংলায় বলি।
বাহান্নের ক্ষত যতনে রেখে,
আমি বাংলার পথ চলি।
সালাম, রফিক, জব্বারের ওই
খুন রাঙা রাজপথে,
এ হৃদয় নুয়েছে ধূলায়।
একুশের শ্রদ্ধা মননে প্রতিক্ষণ,
জড়িয়ে রক্ত ধারায়।
কাব্যঃ-৫
শিরোনাম:- ‘নারী তুমি প্রেরনাদাত্রী’
কলমে:- সরদার রাকিবুল ইসলাম বনসাই
সে জাতি দিশেহারা অস্থির চোখেও,
স্বপ্ন জাগাতে জানে।
ঘুনে ধরা খুঁটির কুঁড়েঘরকেও সাজাতে জানে,
কল্পনার স্বপ্নরাজ্যে।
তারা ঝাপসা চোখে আকাশ দেখতে জানে,
জীর্ণতা দূর করে মানসলোকে আনন্দ বয়ে আনে।
আর তাই তো তারা নারী।
পঁচিশের দীর্ঘশ্বাস একটি বন্ধু চায়,
বেলা শেষে মায়াবী চোখের কাজল হবে বলে।
অর্ধশতর সেই শ্রদ্ধার মানুষটি,
সেও চায় একটি নারী!
ভরসার চাবিগুলো যার আঁচলে বেঁধে দেবে।
আশি ঊর্ধের প্রানটিও আজ নারী চায়।
অতীতের সুরে মা ডাকবে বলে।
মততার, ভরসার আর ভালোবাসার,
সেই রক্ষিত জায়গাটা তো নারীই।
সুপ্ত সাহসের বিচ্ছুরণ ঘটাতে,
আজ প্রেরনা চায়।
ভাঙা হৃদয়ে স্পন্দন ফেরাতে আজ,
নরম সুরের ভায়োলিন চায়।
নিশ্চল মরু চক্ষু ভিজতে চাই,
ভালোবাসার বারিতে।
প্রতীক্ষার ক্লান্ত নিঃশ্বাসগুলো নারীর অপেক্ষায়।
খুঁজে পেয়েছি যাকে হারাতে চাইনা আমি তাকে,
সে মোর কাঙ্ক্ষিত প্রতিক্ষার নারী।
সেইতো আমার প্রেরণা,
আমি তার সকল সাধের সাধনা।