1. fancy615439@gmail.com : Jannatul Ferdous Abodhi : Jannatul Ferdous Abodhi
  2. ahmedsuman307@gmail.com : Ahmed Suman : Ahmed Suman
  3. rakibowasim@gmail.com : Rakib-Ul Islam : Rakib-Ul Islam
পঞ্চ কাব্যঃ- মৃদুল সাহা - দৈনিক সপ্তস্বরা
সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩, ০৮:২৬ অপরাহ্ন

পঞ্চ কাব্যঃ- মৃদুল সাহা

Jannatul Abodhi
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ২৫ আগস্ট, ২০২১

কাব্য –১
শিরোনাম ===অস্বস্তি

সেদিন সারারাত কেঁদেছে হলুদ চাঁদ
ভেজা নারকেল পাতায়
আঁধারের নরম চুল চুঁইয়ে চুইয়ে
ঝরছিল তার অশ্রুধারা

সে এক অনাদি স্বপ্নের ব্যথা
অন্তহীন আকাশে শুভ্র মেঘের পাখায়
উড়ে গেছে কত পথ,কে জানে –!

আমি তখন বসে আছি
একটি পোড়া বাড়ীর দেয়াল ঠেসে
বসে বসে নির্ঘুম কথার বুনিয়াদ
দু’চোখে ভেসে উঠে
ফেনিল সমুদ্র–নক্ষত্রের আদি আকাশ
ডোর বাঁধা কিছু স্বপ্নের অভিলাষ

ভাঁটা পড়া হলুদ নদীর অবশেষ কীর্তিময়
কিছু নিশ্চুপ সংলাপ,
হঠাৎ দেবদারুর মতো মাথা উচু করে
কে যেন বল্লো
তুমি কেমন আছ নদী ?
একটি নিরুত্তাপ কন্ঠ —
সম্মোহনের ভিতর আমি নির্বাক।

মানি প্লেন্টের ডাগর পাতা থেকে
ঝরছিল বৃষ্টির জল
আমি যেখানে শুয়ে ছিলাম,আধো তন্দ্রার
পরম শান্তির নির্জন যৌবন –!

ঘুম ভাঙা শিশুর মতো সহসা ডেকে
উঠে দাড়কাক
শান্তির অকাল মৃত্যুর আহ্বান
ছিড়ে গেলো আমার স্বপ্ন দেখার
রেশমি সুতার বাঁধন।

ককিয়ে উঠে এক জড়োসড়ো বৃদ্ধামা
–আগে পড়েনি চোখে আমার–
নীরবে চেয়ে দেখি শীর্ন দেহ যেন
কঙ্কাল সার আফ্রিকার ক্ষুধার মানচিত্র !

তিস্তার মতো শুকিয়ে গেছে একদা
শুদ্ধ ভালবাসার দুটি স্নেহময় স্তন
যেখানে একদিন হয়েছিল সৃষ্টির পরম লালন
মৃদু দীর্ঘশ্বাসে যেন ভিসুবিয়াসের নিদারুণ সন্তাপ।

আমাকে চমকে দিয়ে আবার প্রশ্ন ভেসে
অলৌকিকের মতো,
কেমন আছ নদী ?

আমি তখন নিরুত্তর—
ভিতরটা জ্বলছিল রাবনের চিতার মতো
উত্তাপে তার গদ্যময় সংলাপ-
অস্বস্তিতে ভাঙ্গছিল বুকের পাঁজর।
যেন বুকের ভিতর বিঁধে আছে শত শত শর !

কাব্য–২
শিরোনাম–মলিন চিরকুট
কলমে–মৃদুল সাহা

মলিন চিরকুটে জমে থাকে
বাসনার কড়া রোদ
নিঃশেষ অপেক্ষার পদধ্বনিতে
সুর তোলে বেহাগ
চাতকের চোখ খোঁজে শ্রাবণের স্ফটিক জল
নিঃসঙ্গ জানালায় রক্ত করবী দিয়ে
যায় মধ্যাহ্ন বাতাস।

নির্জন করিডোরে পড়ে থাকে
স্বপ্নদের গুঁড়ো ছাই
বননীলের ঘ্রাণে পেতে চায় অমর জীবন তৃষ্ণা
শেষ বিকেলের ধূলিতে ইচ্ছেদের অনন্ত বাসর
কুয়াশার অঞ্জলি মুছে দিয়ে যায়
যতনে ভোরের কাক।

মাটির সোঁদা গন্ধে বেঁচে থাকে
ঘাস ফুলেদের স্বপ্ন ঋণ
অনু কথার আলপনা গুলো
ভেসে যায় মেঘমালায়
স্মৃতির দুয়ারে জোনাকিরা আমৃত্যু
রেখে যায় স্নেহপণ
জোছনায় দীর্ঘয়ু রাতের গল্পের ভীড়ে
একেলা মতন।

ভিন্ন একটা আকাশে জ্বলজ্বল করে
আমার সারাবেলার কাব্য
মরণের হিম শীতল বুকে ও তারা
নির্ভীক খোঁজে জন্মান্তর
ভাঁটিগাঙের অশ্রুজলে উজানী
সুখের মায়া কাঁদে
বৈষ্ণবী সুরের বউকথা বিলেয়ে দিয়ে
যায় জীবনের জয়।

কাব্য–৩

==বিপন্ন গোলাপ==

কলমে –মৃদুল সাহা

গোলাপ বাগে এখন অন্ধকার
জোছনা উঠেনি আজ
তুমি ও হয়ত কোন আকাশ দূর
তারারা সাজায়নি সাজ।

কলিরা সব গেছে মুর্ছা নীরব
গন্ধ ফুরিয়ে অলস
বাতাসে আর বহে না আমোদ
স্মৃতির সন্ধ্যা বিবস।।

মেঘলা আকাশ বিরান বিভাস
ঝরে না বৃষ্টির জল
নিথর সরোবরে নাই ঢেউ খেলা
বিরস বদনা কমল !

মন পাখি আর ভিজাস না আঁখি
জাগিস না রাত বিরাত
তুই যে বড়ই ভোলা পথিক
পাবি আর কত আঘাত ?

দিন বদলে সময় ফুরায়ে যায়
ভাঙ্গে যে সাধেের নীড়
নিখোঁজ বসন্তের ঝরা পাতায়
শুকিয়ে গেছে শিশির।

মেঘ বালক আজ হারিয়েছে পথ
পায় না খুঁজে দিশা
বধির পৃথিবীর মরমে রোদন
আঁধারে অতল অমানিশা।।

কাব্য–৪

শিরেনাম– দিন শেষে

কলমে =মৃদুল সাহা

হলো দিনের শেষ
আঁধার আবেশ
নীরব চারিধার–

আবির ঘন মেঘ
অনুরাগে আবেগ
দিগন্ত একাকার।।

জ্বলে শুকতারা
কত মায়া ভরা
মোহিনী আলোয়–

দূরে মহুয়া বন
গাহে গুন গুন
শান্তি নিথর নিলয়।।

জোনাক জ্বলা সন্ধ্যা
ফুটে রজনী গন্ধা
ছড়ায় মুগ্ধ সুবাস–

রাতের ঝিঁঝি দল
অবিরাম কোলাহল
যেন উৎসব বিলাস।।

চিলতে শশীর মুখ
ম্লান আলোয় বুক
ফ্যকাসে নির্জন ছায়া–

নীড়ে ফিরে পাখি
ক্লান্তির সুরে ডাকি
ছড়ায় করুন মায়া।।

বাজে শাঁকের ধ্বনি
ধূপ দীপে সুরভিনী
বইছে মৃদু সমীরন–

কালো দিঘীর জল
ঢেউয়ে ছল ছল
আঁধারে করে রমন।।

 

কাব্য –৫

শিরোনাম –স্বাধীনতা তুমি

কলমে–মৃদুল সাহা

স্বাধীনতা তুমি এখন প্রদীপের নীচে অন্ধকার,
৩২নং বাড়ীর কয়েকটি গলিত লাশের পঁচা গন্ধ
ছড়িয়ে যাচ্ছে পঞ্চান্ন হাজার বর্গমাইল
এক নিষ্ঠুরতা অভিশাপে অভিশপ্ত !

স্বাধীনতা তুমি দুরাচার সেনানায়কের
সংবিধান বলৎকার
বে-আব্রু কিশোরীর নরম স্তনে
নর পিচাশের নখরের দাগ,
রক্তাক্ত উরুতে লোভী
হায়েনার লালার দুর্গন্ধ !

স্বাধীনতা তুমি স্বেরাচারী শাসকের
হাতের বুলডোজার,
নিমিষেই পিষতে পার
মানবতার মিছিল, গনতন্ত্রের
নির্ভীক সাহসী হাত।

স্বাধীনতা তুমি এখন পত্রিকার
পাতায় ছাপা রঙ্গিন ছবি
কুৎসিত শকুনের,
মুমূর্ষু মুক্তিযোদ্ধার মরচে ধরা
অকেজা বন্দুকের ট্রিগারে
বিষন্ন তর্জনী।

স্বাধীনতা তুমি এখন ঘসেটি বেগমের সাথে
নর মাংস ভোজীদের গোপন আঁতাত
লেডি ম্যাকবেথের উচ্চাবিলাশ ;
ডাইনিদের হাতে নিহত বীরের
কবরে শ্রদ্ধাঞ্জালী দান।

স্বাধীনতা তুমি এখন হরতালে
নিরীহ যাত্রী বোঝাই বাসে
নিক্ষিপ্ত পেট্রোল বোমা,
লাঞ্ছিত বাঁধনদের অজানা পদযাত্রা
সন্ত্রাসীর হাতে গুম হয়ে যাওয়া
কোন নির্দোষ গলিত লাশের
পোষ্টমর্টেমের আর্তি আর
সৎকারের ভাষাহীন প্রার্থনা,

স্বাধীনতা তুমি এখন বাতাসে
জমাট কার্বনডাই-অক্সাইড,
আমার নিঃশ্বাসের কষ্ট ভরা
বুকের ভিতর ক্যান্সার !

স্বাধীনতা তুমি কুলাঙ্গার নেতাদের মিথ্যে ভাষন
জনগনের সাথে কৌশলী প্রতারনা,
দেশপ্রেম হীনের মুখে দেশপ্রেমের কথার ফুলঝুরি
ক্ষমতার লড়াইয়ে নরবলির উল্লাস।

স্বাধীনতা তুমি আমার কৈশোরের
হারিয়ে যাওয়া ভালবাসা
ছোট বেলার নিখোঁজ হয়ে যাওয়া
পিতার খুঁজে পাওয়া
বধ্য ভূমির হাড়গোড়
আর নির্যাতিত দেশ প্রেমিকদের
দূর্ভর পায়ে দেশ ত্যাগের চির প্রস্থান !!

কবি পরিচিতিঃ-

 

কবি মৃদুল সাহা, জন্ম ১৯৬২ সালের ১৩ এপ্রিল। চাঁদপুর জেলার, কচুয়া থানার অন্তর্গত তুলপাই গ্রাম। ৭ ভাই বোনের সংসারে, কবি চতুর্থ। তিন বোন চার ভাই। বড় ভাইকে ছোট্ট বেলায় কবি হারান। চরম দারিদ্র্যের সংসার,বাবা চাকুরী করতেন নারায়নগঞ্জে একটা ছোট্ট প্রতিষ্ঠানে। নাম মাত্র আয়ে অভাব নিত্য নৈমিত্তিক। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর অবস্থা চরম হলে নারায়ণ গঞ্জে চলে আসেন। শহরের ঘিঞ্জি এলাকায় ছোট

ফেইসবুক আইডি থেকে মন্তব্য করুন :

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সমজাতীয়
© All rights reserved © 2022 swaptasora
কারিগরি সহযোগিতায় : মোস্তাকিম জনি