কাব্য–১
শিরোনাম –ধর্ষক তুই
কলমেঃ-মৃদুল সাহা
ধর্ষক তুই রক্তপিপাসু নরপিচাশ
তুই কখনো মানুষ না
তোর পরিচয়ের কোন সংজ্ঞা
আমি আজও জানি না।
সবাই বলে তুই কিনা পশুর মত
তোর আচরণ পাশবিক
পশুরা কখনো পাশবিক হয় না
ওরা ও কখনো মানবিক।
পশুদের আছে কিছু নিয়ম নীতি
ওদের ও আছে বাছবিচার
তুই ঘৃণ্য নিকৃষ্টতর তোর কাছে
শিশু বৃদ্ধের ও নেই ছাড়।
তুই ছদ্মবেশে এক নরশার্দূল
মানুষের মতো তোর বেশ
তোর নাই কোন স্থান কাল ভেদ
গোটা বিশ্বইটাই তোর দেশ।
নারী দেহের ঘ্রাণে তোর লালসা
তুই তখন সাক্ষাৎ শয়তান
কাম লালসায় তুই উন্মাদ উদ্বত
ছিঁড়ে ছিবড়ে করিস খানখান।
চিত্তে তোর কুলষিত অন্ধকার
তুই মূর্তিমান মহা আতঙ্ক
তুই বিশ্বাস ঘাতক ভয়ংকর
তুই মহা অভিশাপের টঙ্ক।
তুই নরকের কীটের ও অধম
বৃথা তোর সব জন্ম কর্ম
তুই জগতে আস্তাকুঁড়ে নিপতিত
তোর নেই কোন জাত ধর্ম।
কাব্য –২
==তুমি কোথাও নেই==)
==মৃদুল সাহা
মনে হয় তুমি কোথাও নেই
কথা গুলো সব মৃতের মত
স্মৃতিরা দিগন্তের কাছে মলিন
তারাদের মত বিবর্ন ক্লান্ত।।
মনের অজান্তেই ঝরে যায়
বিশ্বাসের আদরে ফোটা ফুল
বিষাদের চিঠি গুলো ভরে উঠে
ধূসর পান্ডুলিপিতে শুধু ভুল।।
বসন্তের কনক অঞ্জলিতে
সিক্ত হয় না শিমুল পলাশ
মাঝ রাতে দগ্ধ–ভরা যৌবন
নিশিদিন করে যায় উপহাস।।
ভ্রান্তির ছলানায় খুঁজেছি ছায়া
কত প্রশ্ন অবোধ মনের মুখরে
জাননি–কত চিঠি–নিরুত্তর
নিখোঁজ নীড়ে গিয়েছে ফিরে।।
আজ বহুদিন সকালের রোদ
আসে না আমার বারান্দায়
বিকেলের তোলা কত কবিতা
হারিয়ে যায় সন্ধ্যার মায়ায়।।
জোছনার চোখে মেঘেদের ছাই
ঝরে–আলপনায় স্তুপ স্তুপ আঁধি
নীরবতায় স্তব্ধ বীণায় রোদন
নির্ঝরের মতো কাঁদে নিরবধি।।
মন কেমনের নোনা জলে আমি
এখন প্রতিদিন সূর্য ডোবা দেখি
ভাসিয়ে দেই স্বপ্নদের সব তরঙ্গ
নিঃশেষে হৃদয়ে যা ছিল বাকী।।
কাব্য –৩
শিরোনাম ==কি কথা মনে
==মৃদুল সাহা==
কেউ একজন এসে কি
বলে গেল মনে মনে ?
কি কথা ভাবিস বলতো
আপনি আপনার সনে–?
জানিস তো এই সবই
দুদিনের রঙ্গ খেলা
চেয়ে দেখ ঐ যে দূরে
সূর্য ডোবে একেলা।।
মন পাথারে মেঘ বাদল
ঝড় বৃষ্টি নিত্য
মাঝ গাঙের অকূল ঢেউ
ফেনায় অবিরত–!
ভাবতেই পারিস অনেক কথা
স্মৃতি সুরের সাকি
রাত গভীরে জোছনা কাঁদে
স্বপ্ন সবই ফাঁকি–!!
কাব্য—৪
==ভালবাসা ==
ভালবাসা তুমি তো কোন
এলকোহল নয়
তবু কেন বার বার তোমার
জন্যই নেশা হয় ?
পাঁড় মাতাল হয় এই জীবন
অমৃত নেশার ঘোরে
কেউ পায় কেউ পেয়ে হারায়
কেউ বঞ্চিত অনাদরে।
রাজা উজির ভিখেরী ফকির
করে তোমারই খোঁজ
দিনের শেষে কাঙ্গাল বেশে দেখি
প্রতিদিন প্রতিরোজ!!
কত কি যে বলাও তুমি ক্ষনে
ক্ষনে কত কি করাও
পলকেই তুমি ভাঙতে পার সব
পলকেই গড়ে দাও।
ঢেউয়ের মতোই তুমি চঞ্চল
সাগরের মত উদার
কখনো ভাসাও একূল ওকূল
কখনো দেখি হাহাকার।
আপন বক্ষে রাখ ধরে জীবন
কত স্মৃতি বেদনা
কখন হাসাবে কখন কাঁদাবে
কেউ তো জানে না।
অন্তহীন তুমি সনাতন তোমার
জন্যই সব বেঁচে থাকে
তুমি নেই তো কিছু নেই শূন্য এই
পৃথিবী বিষাদে ঢাকে।।
কাব্য–৫
==স্বপ্নদের ঘর নেই==
==মৃদুল সাহা
স্বপ্নদের কোন ঘর নেই
তবু তাদের ঘর পুড়ে রাত দিন
ছাই হয়ে ভেসে যায় –অন্তহীন আকাশে।
রাত্রির ঘ্রাণে ভস্মের গন্ধ
মেঘেদের মত শীতল
বৃষ্টির মতো অবিরাম ঝরে
নিশি পদ্ন পাতার-পরে।
চোখের কোণে কেবলি ঝড়-জল
জমে থাকে বিষন্ন একেলা ঘন বাদলে
ভিতরে বাহিরে—
শ্রাবণের বিরহে সন্ধ্যার হাওয়া
ছোট নদী নিথর অকূলে !
ঘুণ ধরে যৌবনের বয়সী গানে
আদিম শেকড়ে –নিঃশেষ প্রান্তে
পথ চলার আর পথ নাই
শুধুই অন্ধ বিলাশ-নির্জন
খেলাঘরে !
আঁধারের ফসিল জমে থাকে
থরে থরে–সহশ্র শবের শিবির
ধূপ-ছাইয়ের মতো অবশেষ
নাই কোন আকুতি।
সময়ের ষোড়শী প্রহর–
যেন বন্ধন হীন রাতের মতো
—ঝিল্লিদের বিয়োগান্ত অশ্রুপাত —
উন্মক্ত বক্ষদেশ–অনাবৃত মলিন
-কাজলের ইতিকথার রেখাপাতে।—
জোনাকিদের ছোট্ট আলো ছায়ার বাসর
—অপেক্ষায় জেগে থাকা রাতভর
মিছে সুখের সন্ধানে গল্পের খোঁজে—-!!
————-