প্রাপ্তি
কলমেঃ- শংকর ব্রহ্ম
তোমার জন্য জমা ছিল কয়েকটি দিন
বুকের ভিতর ভাবনারত
দুপুর ও রাত কেটে গেছে দুঃখে সুখে ইচ্ছা মত
বুকের ভিতর দাগ পড়েছে গাঢ় আরও।
যখন তোমার দেখা পেলাম
কাছে পেলাম মুখো মুখি
টেবিল ঘিরে কয়েকটি কাপ শূন্য শুধু পড়েই আছে
মুহূর্তকয় তোমার আমার বোঝাবুঝির ভুলের জন্য।
দুঃখ পাওয়া মন্দ কি আর?
বুকের ভিতর শক্ত হবে সূক্ষ্ম হবে চিন্তাধারা
ভিতর থেকে দেখতে পাব স্বচ্ছ নদীর জলের ধারা।
দুঃখ আমার একান্ত আজ
তোমার তাতে কি আসে যায়?
তুমি শুধুই সুখে থাক
সবাই কি আর সব কিছু পায়?
নিরপেক্ষা
কবিতাঃ- শংকর ব্রহ্ম
আমরা কেউ নিরপেক্ষ নয়
নিরপেক্ষ বলে কিছু হয় না
মনের ভারে পাল্লা একদিকে ঝুঁকে পড়ে
নিরপেক্ষ কারও মন হয় না
স্বার্থের ভারে মন একদিকে ঝুঁকে পড়ে
নিরপেক্ষ কারও স্বার্থ হয় না
লোভের ভারে স্বার্থ একদিকে ঝুঁকে পড়ে
নিরপেক্ষ লোভ কিছু হয় না
অসূয়ার ভারে লোভ একদিকে ঝুঁকে পড়ে
নিরপেক্ষ ঝোঁক কিছু হয় না
নিরপেক্ষতা নিজের ঝোঁকেই
পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে পড়ে।
রাধা-কৃষ্ণ
কলমেঃ- শংকর ব্রহ্ম
কদম গাছে বাঁশি হাতে বালক থাকে বসে
বালিকা কোন দেখতে পেলে ফুল ছুঁড়ে সে হাসে
ডাক নামটি কৃষ্ণ যে তার
ওরা সবাই কেউ নয় আর রাধা নামের যত
বালিকারা ঘুরে বেড়ায় পথে ঘাটে কত।
কৃষ্ণ কিছু করে না কাজ বাজায় শুধু বাঁশি
মুখে যে তার লেগে থাকে অনাবিল এক হাসি
তাই দেখে কি রাধার বুকে বেজে ওঠে সুর
কৃষ্ণ এখন মথুরায় নয় থাকে হৃদয়পুর।
কৃষ্ণ রাধার হয় না মরণ যুগ যুগ হয় পার
প্রেমের খেলায় নারী পুরুষ ধারে না কারও ধার।
এ কালেও কৃষ্ণ রাধা খুঁজলে পাবে পাড়ায়
ওরা শুধু প্রেমের গুঁতোয় সব কিছু যে হারায়।
কবিতা
বৃষ্টির ঠিকানা .
কলমেঃ- শংকর ব্রহ্ম
তুমি এক আহাম্মক তাই ভাব গোলাপটা লাল
এর চেয়ে সতেজ সবুজ কোন ফুল
তুমি দেখেছ কোথাও
সমস্ত জীবন যার বুক জুড়ে সমুদ্র আকাশ
তাকে তুমি স্বাভাবিক গলায় শেখাও
ভালবাসাহীনতাই পাপ
তুমি এক নির্বোধ
তাই আজও ভালবাসা মান
গোলাপের সাথে কর রমনীর ঠোঁটের তুলনা
সদরে দাঁড়িয়ে বল আকাশের রঙ ঘন নীল
আকাশটা নীল এ কি কোন বিশেষ সংবাদ
তর্ক থাক
রঙ বলে আকাশের কোন কিছু নেই
যা আছে তা হল বৃষ্টির ঠিকানা,
বৃষ্টির মত কোন ভালবাসা নেই
যা সময়ে ঝরে যাবে ফসল ফলাবে।
মনের মধ্যে আছো
কলমেঃ- শংকর ব্রহ্ম
সরস্বতীর আজ হবে ভাসান
সময় বেছে নেয় মৃত্যু দিন,
বাতাসে ভাসে মৃত্যুঞ্জয়ী গান
মন তবুও হয়েছে যে মলিন।
তোমাকেই তো সরস্বতী ভাবি
বীণার তারে তুলেছো ঝংকার,
গানে গানে খুলেছ মনের চাবি
তুমি যে আজ সবার অহংকার।
তোমাকে আজ বিদায় দিতে মন
চায় না বলেই করুণ কান্না ঝরে,
গানের কথা ভাবলে বিলক্ষণ
তোমার কথা কেবল মনে পড়ে।
মন বসে না আমার কোন কাজে
মনের মধ্যে আছ তুমি আমার
মনে বিসর্জনের বাজনা বাজে
সরস্বতীর হল যে সময় যাবার।
কবি পরিচিতিঃ-
নামঃ- শংকর ব্রহ্ম।
পিতার নামঃ- হরলাল ব্রহ্ম।
মাতার নামঃ- গীতা ব্রহ্ম।
জন্মঃ- কোলকাতা (২রা মার্চ ১৯৫১)
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ- বানিজ্যে স্নাতক।
জীবিকাঃ- বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা (প্রধান-শিক্ষক,
বর্তমানে – অবসর প্রাপ্ত)।
কবিতা চর্চা -১৯৭০ সালের শুরু থেকে –
সান্নিধ্য লাভ – বুদ্ধদেব বসু, প্রেমেন্দ্র মিত্র, হীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, শিব নারায়ণ রায়, অমিতাভ চৌধুরী, পবিত্র সরকার, সমরেশ বসু, অরুণ মিত্র, সুশীল রায়, নারায়ণ গাঙ্গুলী, অমিতাভ চৌধুরী, যজ্ঞেশ্বর রায়, নীহার রঞ্জন গুপ্ত, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, হেমেন্দ্র বিশ্বাস,
বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, কিরণশংকর সেনগুপ্ত, সুনীল গাঙ্গুলী, প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত, শক্তি চ্যাটার্জী, দীপক মজুমদার, পবিত্র মুখার্জী, দিব্যেন্দু পালিত, দেবাশিষ বন্দ্যোপাধ্যায়, গৌতম চ্যাটার্জী ( মহীনের ঘোড়াগুলি) প্রমুখ।
প্রকাশিত কাব্য গ্রন্থ –
১). তোমাকে যে দুঃখ দেয়
২).স্মৃতি তুমি আমাকে ফেরাও
৩).যাব বলে এখানে আসিনি
৪).আবার বছর কুড়ি পরে
এ’ছাড়াও আরও দশটি ‘ই-বুক’ প্রকাশিত হয়েছে।
প্রকাশিত কবিতা শ’পাঁচেক-এর চেয়েও বেশী। প্রায় শতাধিক পত্রিকার লেখক। ‘দৈনিক বাংলা স্টেটসম্যান’, পুরশ্রী, ‘প্রসাদ’, ‘বিকল্প বার্তা (শারদীয়া সংখ্যা – ১৪২৮) এ’ছাড়া রয়েছে –
( সমরেশ বসু সম্পাদিত – মহানগর, শিবনারায়ণ রায় সম্পাদিত – জ্ঞিসাসা, কিরণ শংকর সেনগুপ্ত সম্পাদিত – সাহিত্য চিন্তা, পবিত্র মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত – কবিপত্র প্রভৃতি)।
বহু পুরস্কারে ভূষিত। ‘সারা বাংলা কবি সন্মেলন’ ( ১৯৭৮ সালে) সালে তরুণদের মধ্যে প্রথম পুরস্কার। ‘সময়ানুগ’ (১৯৭৯ সালে) প্রথম পুরস্কার। ‘ যুব উৎসব (১৯৮০ সালে)-এ পুরস্কৃত।
ও অন্যান্য আরও পুরস্কারে ভূষিত।