২০১৮ সালে নাসার ‘ইনসাইট’ ল্যান্ডার মঙ্গলে গিয়েছিল। এত দিনে তার আয়ু শেষের পথে। কিন্তু ইতিহাস তৈরি করে দিয়ে যাচ্ছে ওই ইনসাইট। নাসার বিজ্ঞানী ব্রুস ব্যানার্ট বলেছেন, ‘আমরা এখন জানি, মঙ্গলের উপরিতল কতটা পুরু। গভীরের কাঠামোটা কেমন।’
এছাড়া মঙ্গলের বুকে ১৩১৮টি কম্পনের অস্তিত্ব ধরে ফেলে ইনসাইট নিশ্চিত জানিয়েছে যে, লাল গ্রহেও ভূমিকম্প হয়! গত বছরের সেপ্টেম্বর ও ডিসেম্বরে মঙ্গলে দুটি জোরালো কম্পন টের পেয়েছিল ইনসাইট। ‘সায়েন্স’ পত্রিকায় প্রকাশিত দু’টি গবেষণাপত্র বলছে, ওই কম্পনের কারণ ছিল উল্কাপাত।
মঙ্গলকে প্রদক্ষিণ করা মার্স রিকনিস্যান্স অরবাইটারের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে, গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর আছড়ে পড়া উল্কাটির আঘাতে মঙ্গলের বুক ফুঁড়ে বেরিয়ে এসেছে বরফ। বোল্ডারের আকারের সেই বরফ পড়ে রয়েছে উল্কার তৈরি করা গহ্বরের কিনারায়। মেরু অঞ্চল নয়, প্রায় মঙ্গলের বিষুবরেখার কাছে, এত গরম জায়গায় বরফ! উল্লসিত বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভবিষ্যতের মঙ্গল অভিযানে পানির চিন্তা মিটল।
এ তো গেল বরফের কথা। মঙ্গলের উত্তর গোলার্ধে শুকিয়ে যাওয়া আস্ত একটি মহাসাগরেরও চিহ্ন মিলেছে সাম্প্রতিকতম ভূ-প্রাকৃতিক মানচিত্রে। আমেরিকার পেনসিলভেনিয়া স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বেঞ্জামিন কার্ডেনাসের নেতৃত্বে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে ‘জার্নাল অব জিয়োফিজ়িক্যাল রিসার্চ: প্ল্যানেটস’ পত্রিকায়।
বেঞ্জামিন জানান, মঙ্গলের অপেক্ষাকৃত নিচু উত্তর গোলার্ধে প্রায় ৩৫০০ কোটি বছরের পুরনো তটরেখা, কয়েক হাজার বর্গকিলোমিটার জুড়ে পড়ে থাকা ৯০০ মিটার পুরু পলির আস্তরণের প্রমাণ তারা পেয়েছেন। তিনি বলছেন, ‘পৃথিবীতে আমরা পলির আস্তরণ দেখে পানির গতিধারার ইতিহাস খোঁজার চেষ্টা করি। সেটাই আবার করেছি। তবে মঙ্গলগ্রহে!’