কলমেঃ শুভ্রাংশু শেখর শ্যামল
ছোট্টবেলা থেকেই খোকার সাধ ছিল খুব মনে,
সেই থেকে তার আশা গুলো ভাবায় প্রতিক্ষনে।
বাবা ও মা বলতো তাকে পড়রে অনেক পড়া,
বড় হয়ে খোকন আমার চড়বে গাড়ি ঘোড়া।
সেই আশাতে খোকন সোনা করলো অনেক পাস,
তাদের ছিল চিরদিনের কুঁড়ে ঘরে বাস।
চাকরি খুঁজে পেল না সে দিন মজুরি খাটে,
দুঃখের মাঝে থাকতো সুখে এমনই দিন কাটে।
বড় হতেই বাবা-মা তার করিয়ে দিল বিয়ে,
রোজ মজুরি খরচ হতো চাল কিনতে গিয়ে।
বাজার গেলে গাড়িগুলো হুইসেল দিয়ে যায়,
গাড়ি চড়ার কথাগুলো মনে আশা জাগায়।
রাতদিন সে খাটলো প্রচুর বাড়তি জমা রাখে,
আসলো ঘরে খোকা-খুকু খরচ হতে থাকে।
সাধ গুলো তার পূরবে কবে ব্যথা জাগায় বুকে,
কি করে যে কিনবে গাড়ি চড়বে মনের সুখে।
ব্যথায় ভরে বন্ধুরা সব যাচ্ছে গাড়ি চড়ে,
ছোট্ট বেলার কথা গুলো সদাই মনে পড়ে।
আশা নিয়ে দিন চলে যায় চুল ও গেল ঝরে,
মনের ব্যথা বুকের মাঝে হঠাৎ কেমন করে।
পর দিন সে গাড়িতে চলে একা তাতে সাওয়ার,
তারই ছেলে চলছে হেটে চারজন ড্রাইভার ।
কবি পরিচিতিঃ
বঙ্গোপসাগরের তীরে ছোট্ট একটি বদ্বীপ ব্রজবল্লভপুর। দ্বীপ-টি ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার, পাথরপ্রতিমা থানার অন্তর্গত। চৌহদ্দি জুড়ে ম্যানগ্রোভ পরিখা। মাঝে মাঝে শোনা যায়, পাড় ভাঙ্গা ঢেউ-এর হুংকার। সারা দিনমান জেলে মাঝি ও চাষীদের নিদারুণ দিনাতিপাত। তারই মাঝে কবি শুভ্রাংশু শেখর শ্যামল এক অনন্য অস্তিত্ব। সৃষ্টির অদম্য নেশা তাকে করে তুলেছে কাব্যের কারিগর। নিদারুণ দারিদ্রতা ও অনাড়ম্বর জীবন-জীবিকা ষাটের ঊর্ধ্বে বয়স হলেও তিনি মুহূর্তে হয়ে ওঠেন তরুণ তরতাজা কাব্য স্রষ্টা। তার লেখায় আজও সমৃদ্ধ হয় জাগরী, সৃষ্টি সারথি, কিশলয়, সবুজ সাথী, তোর ঠোঁটে রোদ্দুর, গ্রহাতারা সাহিত্যপত্রের মতো বহু পত্রপত্রিকা। পাঠকমহলের অপার ভালোবাসা ও প্রশংসায় তিনি কলম চালিয়ে যাচ্ছেন বলিষ্ঠ যোদ্ধার ন্যায় এবং অত্যন্ত দারিদ্রতা তার সৃষ্টিতে প্রবল বাধা প্রদান করা সত্ত্বেও উদাসীন কবি শুভ্রাংশু শেখর শ্যামল অনাসক্ত ভাবে জীবনের কাব্যতরী দিয়ে চলেছে আরশিনগরের রূপায়ণে।